চেয়ার যদি গদি

“ওই ডাক্তার একপর্যায়ে আমাকে রুম থেকে বের করে দেন। এ ধরনের রূঢ় আচরণকারী চিকিৎসক আমরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি সেবা প্রতিষ্ঠানে কোনোভাবেই আশা করি না।”
– সালমা  ইসলাম, ঢামেক হাসপাতালের এক নারী চিকিৎসকের অভদ্র আচরণ, যুগান্তর

যুগান্তরের মালিক সালমা ইসলামকে চেয়ারে বসতে দেন নাই চিকিৎসক মীম। তিনি রুম থিকা তারে বেরও কইরা দিছেন! এই অভিযোগে এখন মীমের বিরুদ্ধে খবর ছাপানোর মাধ্যমে সালমা ইসলামের মিডিয়া অ্যাকশন শুরু হইছে!

এতে আমি খুব ভুল দেখি না।

আমার প্রশ্ন ছোট্ট—কেন দেন নাই মীম সালমা ইসলামকে বসতে?

জরুরি বিভাগে যদি বইসা গিয়াই থাকেন সেখান থিকা ওঠানোর কি ভদ্রজনোচিত অভিব্যক্তি ছিল না? জরুরি বিভাগে ডিউটিরত জরুরি লোকজন নিশ্চয়ই সেখানে ছিল না যখন সামলা বেগম চেয়ারে বসতে ছিলেন। তার সঙ্গে লোকজন ছিল। সালমা ইসলামকে তার লোকজনের সামনে অপদস্থ করবেন আর সালমা ইসলাম চিকিৎসককে ছাইড়া দিবেন?

মীম কেন বসা থিকা ওঠাইয়া দিলেন সালমা ইসলামকে? চিনেন নাই বইলা? মানে না চিনলে হাসপাতালে জরুরি বিভাগে চেয়ারে বসতে দেন না ওনারা কাউরে? ছাত্রলীগ গেলেও কি বসতে দেন না? বা যুবলীগ? বা মন্ত্রী উপমন্ত্রী?

ভদ্রতার অভাবই তো এই ঘটনা। ক্ষমতার চর্চাও। মীম তার ক্ষমতার আস্ফালন দেখাইছেন বলা যাবে কি? যেমন এখন সালমা ইসলাম দেখাইতেছেন।

তো যারে ভদ্রলোক জ্ঞান করেন না, জরুরি বিভাগের চেয়ারে বসলে ভদ্র পন্থায় ওঠাইবেন না তিনি ভদ্র পন্থায় আপনার লগে ফাইট দিবেন কেন? তার হাতেও তো চেয়ার আছে। মিডিয়া তার চেয়ার। তিনি তার চেয়ার দেখাইয়া দিবেন এইটাই তো স্বাভাবিক।

এখন একজন মানী লোকরে চেয়ার থিকা এইভাবে ওঠানো কেন? বা রুম থিকা এইভাবে বের করা কেন? ছোটলোকদের জন্যে কোথাও চেয়ার নাই সেইটা মানলাম। তাদের পক্ষে ফাইট করার মিডিয়াও নাই। এখন? বড়লোকের মিডিয়া আপনাদের ক্ষমতার দৌড় দেখতে নামছে। তার কাছ থিকা ভদ্রতা আশা কেন করবেন?

ক্ষমতার খেলা প্রত্যেকে ক্ষমতার নিয়মেই খেলবেন। আমি এতে সমস্যা দেখি না। চেয়ারে বসতে না দেওয়া ও তাই চেয়ার থেকে সরানো কোয়াইট ওকে।

২.
হাসপাতালওয়ালা, যাদের পয়সায় হাসপাতাল চলে তাদেরকে চেয়ারে বসতে দিন। আপনাদের গদি রক্ষা পাবে। কেবল সরকারী দলের তোষামদেই সব সিদ্ধি হবে না। পাবলিকের ভজনা করেন। জরুরি বিভাগেও যদি কেউ চেয়ারে বইসা পড়ে তারে আস্তে ওঠান। অত তাড়াহুড়া করবেন না।

৩১/৭/২০১৫

Leave a Reply