আঞ্চলিক ভাষা বলতে কিছু নাই

আমি প্রথমে বলবো যে আঞ্চলিক ভাষা বলতে কিছু নাই। আঞ্চলিক ভাষাকে স্বীকার করার অর্থ হচ্ছে রাষ্ট্রকে স্বীকার করা। এখন কবিরা রাষ্ট্রকে স্বীকার করবেন কি করবেন না সেটা তাদের ভেবে দেখতে হবে। রাষ্ট্র ঠিক করে যে কোনটা মান ভাষা হবে, কোনটা আঞ্চলিক ভাষা হবে। আমি সেটা মাইনা কবিতা লিখতে পারি, না মাইনাও লিখতে পারি। এখন আমি যদি মাইনা লিখি তাহলে কিন্তু আমি আঞ্চলিক ভাষাকে স্বীকার করবো। তো আমি আঞ্চলিক ভাষায় বিশ্বাস করি না, আমি মনে করি যে, যে যার খুশিমতো লিখবে, যাকে বলে নৈরাজ্য।

‘ভাষাকে বাঁচাবো’, ‘আঞ্চলিক ভাষায় লিখতে সুযোগ দেয়া উচিত”—এই চিন্তাটাও খারাপ।… টাঙ্গাইলের লোক, ময়মনসিংহের লোক, সিলেটের লোক যদি মনে করে যে নিজেদের ভাষারে তারা সাহিত্যভাষা করবে তো আমি কে আপত্তি করার। ফলে আঞ্চলিক ভাষায় সাহিত্য করতে দেওয়া আর না দেওয়ার কিছু নাই। ওটা যেরকম আছে সেরকমই চলতে থাকবে। আজকে যদি কেউ বলে সিলেটি ভাষার উপন্যাস আমি বুঝি না, সেটা ঠিক আছে। আমরা যদি বুঝতে না পারি, কিন্তু বোঝার খুব ইচ্ছা হয় তখন সেই সাহিত্য অনুবাদ করা হবে। নোয়াখালির সাহিত্য, চিটাগাঙের সাহিত্য ঢাকার ভাষায় অনুবাদ হবে।…

আমার মত হইলো, যে যেমন খুশি লিখতেছে যার ইচ্ছা হইলো পড়বেন, না হয় পড়বেন না—কিন্তু অন্যদেরকে আপনারা নিষেধ কইরেন না।

সাপ্তাহিক কাগজ-এ ১৭/৭/২০০৮ তারিখে “বাংলা কবিতায় আঞ্চলিক ভাষার ব্যবহার” শীর্ষক বৈঠকে প্রদত্ত বক্তব্যের আংশ

 

Leave a Reply