ভাঁড় বা ক্লাউন সমাজের ভাষায় যায় না, সে অন্য রকম ভাবে কথা বলে। রহস্যহীন এক রহস্য ভাঁড়।
তার সঙ্গে কেউ যুক্তি দিতে যায় না। কেননা ভাঁড়কে সমাজ যুক্তির গ্রাহক বিবেচনা করে না।
তো সে কী করে?
ভাঁড় বা গোপাল কারো যুক্তি গ্রহণ করে না। এইটাই তার সামর্থ্য ও পদ্ধতি।
এভাবে যুক্তির অর্থাৎ ক্ষমতার মধ্যে থেকেও ক্ষমতার নাগালের বাইরে থাকার কারণে সমাজকে সে বিবেক বা পিতার ভূমিকা থেকে দেখতে সক্ষম হয়।
যে কারণে কখনো কখনো ভাঁড়কে বিবেক এবং বিবেককে ভাঁড় মনে হয়।
আরো পড়ুন: বিবেক কী হয়? বিবেক হয় একটি যাত্রার বিবেক!
যদিও ভাঁড় বিবেকের মত ক্ষমতার হইয়া কাজ করে না। যেহেতু সে নিজেই ক্ষমতা।
সেক্ষেত্রে সমাজে ভাঁড়ের কাজ কী?
বিবেকের সঙ্গে তার পার্থক্য কোথায়?
বিবেক কথা বলে। অনেক বেশি কথা বলে। ক্ষমতার পক্ষে থেকে থেকে মিন মিন করতে করতে দুর্বলের সান্ত্বনা হয় বিবেক। বিবেকের কাজ দুর্বলকে দুর্বল করে রাখা।
বিপরীত ভাবে ভাঁড়ের কোনো কথা নাই। বা যা সে বলে তা সে বলে না। বিনোদনের ছদ্মবেশে ক্ষমতার শক্তি নস্যাৎ করে চলে ভাঁড়। কখনো এমন হয়, ভাঁড়ই যেন আসল ক্ষমতা।
আরো পড়ুন: ভণ্ড বুদ্ধিজীবী বলতে কী বোঝায়?
যুক্তি বা মস্তিষ্ক বা গণিতের বাইরের যে ধোয়াশা জগৎ বা ক্ষমতাহীনের দুনিয়া তার মাজেজা বা গুরুত্ব তৈরি করে ভাঁড়। সভ্যতার চাইতে প্রকৃতির সঙ্গে থাকে বেশি।
ভাষার ইঙ্গিত ও অব্যক্তকে তার মত কেউ বুঝতে সক্ষম হয় না। সমাজের ভবিষ্যৎকে তার ভাষাভঙ্গির কারণে সহজে ধরতে পারে ভাঁড়।
তবে, ভাঁড় যদি ক্ষমতা গ্রহণ করে তার চাইতে ভয়ঙ্কর কিছু হয় না।
৩/১১/২০১৭