১.
অনেকে এলিটের যুদ্ধকৌশলের কাছে পরাজিত মিডল ক্লাসরে ওদের থিকা সইরা আসতে বলে। এলিটদের বয়কট করার কথাও ভাবে, বিশেষত সমাজতান্ত্রিকরা।
আমি এলিটের কালচাররে জুতা মারার কথাও বলি। কিন্তু হা হা, আমি জুতা হাতে তা মারতে যাব না।
আমার জুতা মারাটা মৌখিক, বললেই মারা হইয়া যায়। তাই আমি এলিট বর্জনে নাই।
আরো নির্দিষ্ট ভাবে বলতে গেলে এলিটের কালচার বর্জনে আমি লড়াইরত।
‘লড়াইরত’ কি ক্লিশে হইছে?
হউক।
এই ক্লিশেও লড়াই, এলিটের বিরুদ্ধে। এবং এলিটম্মন্য মিডল ক্লাসের বিরুদ্ধেও।
২.
এলিট থিকা সরার চেষ্টা কইরা আপনি আসলে কী করতে পারবেন?
এলিটের সঙ্গে মিডল ক্লাসের লেনদেন অর্থনৈতিক। এ থিকা চাইলেও আপনি সরতে পারবেন না। সরতে কী, নড়তেও পারবেন না।
আপনি দেখেন, দিনানুদৈনিক যা যা করেন আর খান-দান পরিধান করেন তার মালিক পক্ষে সন্তরণ করতেছে এলিট রাঘব বোয়ালরা।
আপনি কি আপনার সমস্ত আয় উপার্জন দিয়া এলিটের ইন্ডাস্ট্রির মাল পুঁজির চরিত্র অনুসারে কিনতে থাকতেছেন না?
আপনার চইদ্দ আনা কেনাকাটিতে এলিটের বাঁইচা থাকা ঘটে।
এবং এর পরিবর্তন এতই ভবিষ্যতের যে প্রায় অসম্ভব, কারণ যে যত বেচবে সে তত এলিট হইতে থাকবে।
তাই এই নিয়া আক্ষেপের বা হায়হুতাশের ফাইট আমি করতে চাই না।
আমি চাইতেছি দ্রুত রেজাল্ট আসবে এমন কর্মপন্থা তৈরি করতে।
তা কী?
তা হইতেছে, এলিটের সংস্কৃতিকে জুতা মারা।
ও নিজেদের সংস্কৃতিরে সামনে নিয়া আসা। ও তার মর্যাদা তৈরি।
মনে রাখবেন অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এলিটের সংস্কৃতি মানে আপনার সংস্কৃতির বিলোপ।
৩.
তবে এবং তবু—আমি এলিটের কাছে ছবি বেচতে আগ্রহী।
কারণ সে পয়সা বেশি দিবে। সে আমার ক্রেতা। নাথিং মোর।
তার প্রাপ্য মর্যাদা আমি তারে দিব এই ভিত্তিতে যে সে আমার মর্যাদা হানি করবে না।
তার রুচি আর আচরণের উচ্চম্মন্যতা আমার সামনে পতপতাইতে থাকবে না সে।
এলিটের যেই ফুটানি কালচার—তার বেশির ভাগটাই অবজ্ঞামূলক—তারে সাইজ করার ফাইট জারি থাকা মানে এলিটের সংস্পর্শ এড়াইয়া চলা না।
সমালোচনা ও নিজের সংস্কৃতি জারি রাখা।
লুঙ্গি ইত্যাদি পইরা বাজারের ব্যাগ হাতে এলিটের ড্রয়িংরুমে বইসা হের দেশ কোথায় তা জিজ্ঞাসা করা।
বাপে কী করতো, দাদায় কী করতো তা জানতে চাওয়া।
গরু ছাগল হাস মুরগি পালে কিনা তা জানতে চাওয়া।
আপনার কাছে মেয়ে বিয়া দিতে তার কেন আপত্তি তা জানতে চাওয়া।
প্রাইভেসি বইলা যে ঘোড়ার আণ্ডাটা ওনারা লালন-পালন করেন তারে খাদের কিনারে নিয়া যাওয়া।
মানে হইল এলিটের আভিজাত্য মূলক আচরণবিধিকে আপনার পুরানো মধ্যবিত্ত জীবনাচরণের সামনা-সামনি কইরা রাখা।
এ ব্যাপারে এলিটের গা বাঁচানোর উপায় তার শুদ্ধ প্রমিত ভাষা।
আপনি মিডল ক্লাস অলরেডি সে ভাষার গোলামি করতেছেন।
আপনি তো নিজেই এলিট। হ সোনা, আপনিও এলিট—এইবার চোদা খান!
৪.
তো কীভাবে আপনি উদ্ধার পাইতে পারেন?
প্রথমত সাহিত্যে, শিল্পে, সংস্কৃতিতে এলিট কালচাররে সম্মান মূলক জায়গা দেওয়া বন্ধ করেন।
এর পরে বাপদাদা চৌদ্দ গুষ্টির যেই কালচাররে কবর দিয়া আপনি শহরে আইসা বাবুই পাখির বাসা বানছেন সেই সংস্কৃতিরে স্মরণ করার চেষ্টা করেন।
অন্তত আপনার লাইনের যারা আছেন তাদের সঙ্গে করেন।
সপ্তাহে একবার অন্তত লুঙ্গি পইরা অভিজাত এলাকায় ঘুইরা আসেন।
লুঙ্গিরে কেবল ফরহাদ মজহারে আর অরূপ রাহীতে বর্গা দিয়েন না। এই লুঙ্গি আপনারও।
এই বাজারের ব্যাগ আপনার।
এই পিড়িতে ভাত খাইতে বসা আপনার।
আরও কী আপনি করতে লজ্জা পান ভাবেন। স্মরণ করেন।
এখনও তত দূরে আপনি চইলা আসেন নাই।
মনে রাখবেন, এলিট আপনারে কোনোদিনই গ্রহণ করবে না, আপনি যতই বাবুসাবের ভঙ্গি করেন আর ইংরাজি চোদান।
এলিট একটি হারামজাদা, সে আপনারে স্রেফ তার আভিজাত্যের ভঙ্গি দিয়া বন্দি কইরা রাখছে।
আভিজাত্য নাই তো সেও নাই।
সো, বুঝছেন নিশ্চয়ই, কোথায় লুকানো আপনার ভোমরার বাকসো।
কোথা থিকা আপনি উড়াল দিবেন।
৪/৫/২০১৬