“প্রভুকে ভিক্ষা দিতে সবার হৈল মন।”
– শ্রীশ্রীচৈতন্যচরিতামৃত, কৃষ্ণদাস কবিরাজ (১৫৩০-১৬১০)
•
ভিক্ষা হচ্ছে দয়াশূন্য সম্প্রদান। কাইন্ডনেসহীন অভ্যাসের ব্যাপার ভিক্ষা। দয়ার অনুপস্থিতির কারণে ভিক্ষাদাতার শ্লাঘা হয় না। গ্রহীতারও গ্লানি হয় না কোনো।
তাই আমি ভিক্ষা দান ও গ্রহণের পক্ষে।
দয়াযুক্ত দান দাতাকে মহৎ করে, ভিক্ষা করে না।
ভিক্ষাকে বলা যাইতে পারে দান ও ধারের মাঝামাঝি কিছু একটা।
আপনি ধার চাইছেন কিন্তু অপর পক্ষ ফেরত নেওয়ার অপেক্ষা বা ঝামেলার মধ্যে যাইতে রাজি নাা, তাই সে ভিক্ষা দিয়া দিল। এই হচ্ছে ভিক্ষা।
যে কারণে দেখবেন কোনো ভিক্ষুক যখন তার ভিক্ষার চাউল ফেরত দিতে যায় সে চাউল তখন গিরস্ত নেয় না। এই রকম দৃশ্য কল্পনা কইরা দেইখেন, দেখবেন গিরস্ত ভিক্ষুকের কাছে ছাইড়া দেওয়া চাউল বা অর্থ ফেরত নিতেছে না।
কেন নেয় না?
এইখানেই লুক্কায়িত ভিক্ষুকের গ্রেটত্ব বা মহত্ত্ব। ভিক্ষাদাতার সেই মহত্ত্ব নাই। সর্বদাই ভিক্ষাদাতা ভিক্ষাগ্রহীতার তুলনায় কম আত্মশক্তির মানুষ।
ভিক্ষা চাওয়ার যে মানসিক শক্তি তার তুলনায় ভিক্ষা দেওয়ার যে অবজ্ঞামূলক মামুলিত্ব তাতে ভিক্ষাদানের সব দৃশ্যই এক একটা ক্লাসিক দৃশ্য।
ভিক্ষা দেওয়ার সময় নিজের তুলনায় হাই সেলফ এসটিম সমৃদ্ধ একজন মানুষের মর্যাদা বিষয়ে আমরা রিলাকট্যান্ট থাকি। যেন ভিক্ষুকেরা সমাজের সদস্য নন। রাষ্ট্রও তাদেরকে উচ্ছেদ বা নির্মূলে তৎপর।
তবে মহত্ত্বের অপেক্ষায় না থাইকা যে ভিক্ষা দেয় লোকে এইটা সামাজিক অর্থনীতির বহমানতা।
আমি ভিক্ষার পক্ষে। আমি নিজেও ভিক্ষা করি।
১১/৯/২০২০