স্বার্থপর মধ্যশ্রেণীর বুদ্ধিজীবীরা চাইলে শহীদ মিনারে ঈদ উদযাপনের মধ্য দিয়া দিঙনির্দেশনা দিতে পারে গভমেন্টরে। গভমেন্টের পিএম শেখ হাসিনা দেখলাম ওনাদের ব্যাপারে কথাও কইছেন অভিমান সুরে। মানে গভমেন্ট তাদের দেখতে পাইছে বা পায় দেখা যাইতেছে। প্রধানমন্ত্রীর দাওয়াতেও ওনারা যান না তেমন না। তো ওনারা আর যাই হন বিএনপির বুদ্ধিজীবী না। মানে হইলে–হাঃ হাঃ–না না–আওয়ামী লীগেরও না ওনারা…!
তো এই বুদ্ধিজীবীরা প্রথমে ঈদ করতে চাইছিলেন শহীদ মিনারে। পরে নামাজ পড়ার ভয়ে (ধর্মনিরপেক্ষতা টুঁইটা যাইব গা?) ঈদ করা না করার পরপারে গিয়া ঈদের দিনে শহীদ মিনারে কর্মসূচিতে স্থির হইছেন তারা। অধুনা সড়ক নিয়া উদবেগ দেখাইলেও তাদের কর্মসূচির ইতিহাস তা বলে না।
কত আগাছারা মারা গেছে সড়কে সড়কে
তারা দেখেও দেখে নি আগে…
বরং নিজ শ্রেণীর নায়কদের মৃত্যুতে তাদের আক্রোশ ও প্রতিশোধস্পৃহা বলক দিয়া উঠছে। যার জন্য একটা বলির পাঠার অনুসন্ধান এই কর্মসূচি। আগের দিকে হইলে বা সুযোগ থাকলে এখনো তারা যোগাযোগমন্ত্রীরেই শহীদ মিনারের বেদীতে আইনা কতল দিতেন। বা প্রতীকী ভাবে তাই তো তারা দিতে চাইতেছেন। যে দোষে তারা যোযো মন্ত্রীর পদত্যাগ চাইতেছেন তা হইল–
তারেক মাসুদের ড্রাইভার কেন গাড়ি লাগাইয়া দিল ধাবমান বাসের লগে!
যদিও তারা এইভাবে বলেন নাই… তারা বলছেন সকল অব্যবস্থার কারণেই মন্ত্রীর অপসারণ তারা চান। কিন্তু এই চাওয়ার যেহেতু একটি সূচনা মোবারক আছে তো অভিযোগমালারে তারেকের ড্রাইভার বাদ দিয়া শুরু করা যায় না। কিন্তু বুদ্ধিজীবী সমাজ না তারেকের ড্রাইভার না ঘাতক বাসের যাত্রী কারো কথা মুখেই আনতে চান না! কারণ সকল যোগাযোগ মন্ত্রীর আমলেই, সকল দেশেই, সড়ক দুর্ঘনায় লোক মারা যায়। কিন্তু এই বুদ্ধিজীবীরা বলছেন এইটা নাকি দুর্ঘটনা না–হত্যাকাণ্ড। যেন আর যারা প্রতিভাহীনেরা মারা যায় সড়ক দুর্ঘটনায়–তাদেরগুলা দুর্ঘটনা। তো যোযোমন্ত্রীর পদত্যাগ তারা চান উন্নয়নহীনতার কারণে। কিন্তু একবারও এই বুদ্ধিজীবীরা তারেকের মৃত্যুদিনেই সংবাদ হইয়া আসা উত্তরায় র্যা বের ‘ক্রসফায়ারে’ খুন হওয়া (সব মরণ নয় তো মরণ… কে গাইবেন? মাহমুদুজ্জমান বাবু নাকি?) ৫ জন অপরাধীর জন্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেন না।
অর্থাৎ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা র্যাবের কর্মযজ্ঞের পরোক্ষ বৈধতা তারা জাতীয় বুদ্ধিজীবী হিসাবে নিশ্চিত কইরা দিতেছেন এই আন্দোলন বাইছা নেওয়ার মধ্য দিয়া।
তথাপি আমি এই উন্নয়ন বুদ্ধিজীবীদের সাফল্য কামনা করি। আন্দোলন মধ্যবিত্তের হইলে হউকগা–সফল হইলে তো এই অভাগারও রাস্তাঘাটে প্রাণহানির আশঙ্কা কমবে! কিন্তু অন্যবিধ আশঙ্কাটি তখনও বিরাজমান থাকে। কারণ ওনারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে আগ্রহী হইবেন অবস্থাদৃষ্টে তা মনে হইতেছে না। বরং কোন কবে প্রতিভাবান মেধাবী কেউ র্যা বের ক্রসফায়ারে মারা যাবেন আর আবার কবে ঈদ আসবে শহীদ মিনারে… তার অপেক্ষা ভালো!
২.
আজকে টাঙ্গাইলে বাসের মধ্যে জীপ ঢুকাইয়া দিয়া ৫ জন মারা গেলেন সড়ক দুর্ঘটনায়। বলেন তো এই নিয়া বুদ্ধিজীবীরা কোনো কথা বলবেন নাকি বলবেন না?
আমার ধারণা তেমন কইরা বলবেন না।