মধ্যবিত্ত নাগরিক শ্রেণীর মর্যাদা বোধের ব্যাপারটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক। এরে কেন্দ্র কইরা বইমেলা, চারুকলা, জাদুঘর, পাবলিক লাইব্রেরি, শহীদ মিনার, বাংলা একাডেমি ও নবীন ছবির হাট ইত্যাদি গইড়া উঠছে।
এসব প্রতিষ্ঠান ভেরেণ্ডা গাছের মত কইরা সংস্কৃতি ও রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করে।
ঢাকার ছোটলোকরাও এই পবিত্র বলয়ের মধ্যেই বলয়িত হয়ে আছে।
নট অনলি রিকশা চালাইয়া তারা মধ্যবিত্তরে তীর্থস্থানে পৌঁছাইয়া দেয়। বরং ছুটিছাটা উৎসবাদিতে ছোটলোকরাও মধ্যবিত্তের আনন্দে আনন্দিত হইয়া এইখানে আইসা বিহ্বল ছোটাছুটি করে।
তখন ঘনিষ্ঠ নৈকট্য থিকা তাদের অবসর টাইমের মিডল ক্লাস দর্শন ঘটে।
বটেই, খুবই পজেটিভ এই সব ব্যাপার! কেবল শ্রেণিপ্রশ্ন শ্রেণিহিংসা এইসব অধুনা প্রাচীন বিষয়গুলা যদি আপনি খাইয়া ফেলতে পারেন।
বিশ্ববিদ্যালয়রে কেন্দ্র কইরা যে জাতির মনন তৈরি হবে সে জাতি বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চনিচ বা হায়ারার্কির ধারণাও সমাজরে খাওয়াইতে চেষ্টা করবে।
এর বাইরে থাইকা যাবে গোঁড়া ধার্মিকেরা আর না খাইতে পাওয়া জনগোষ্ঠী। ফলে খুব সহজেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতিরে এনকাউন্টার করতে গিয়া আপনি ধরা খাইতে পারেন অন্যতর চাপমূলক সংস্কৃতির মধ্যে।
কিন্তু এইটা চলতে দেওয়া যায় না। বিশ্ববিদ্যালয় বা মধ্যবিত্ত সমাজের ফোপড়া হইয়া যাওয়া নাটক, গান আর চলচ্চিত্র আন্দোলনের বাইরে সংস্কৃতির চাপা পড়া শক্তির উদ্বোধন ঘটাইতে হবে।
সেইটা কীভাবে সম্ভব?
১. ইউনিভার্সিটি কেন্দ্রিক উৎসব ও লাইফস্টাইলরে প্রশ্ন করতে শিখুন।
২. প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলারে কেন্দ্র কইরা ছোট ছোট বর্গে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড চালু করুন। খেয়াল রাখুন যাতে তা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুমোট সংস্কৃতির টংস্কৃতির ধামা না ধরে।
৩. ছোটলোকের সংস্কৃতিগুলারে ছোটলোকদের স্থলে, উৎসবের আমেজে, কর্পোরেট বাতাবরণের বাইরে, পালন করতে শিখুন।
৪. কেবল লালন বা হাছন বা কোনো বাউল সম্রাটে বিকল্প খোঁজার চিন্তা করবেন না। ওনারা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা সংস্কৃতির বা সিরিয়াস প্রকল্পেরই অংশ।
৫. বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কৃতিতে যুক্ত হন, এর অধিপতি চরিত্ররে পাশ কাটাইয়া। এবং নিজেদেরকে অন্যতর সংস্কৃতির ব্যাপারে গবেষণা বা পরির্দশকময়তার বাইরে গ্রহণে সক্ষম করে তুলুন।
কিন্তু, আবহমানের ভাঁড় গাধার পিঠ থিকা নামবে না মনে হয়।
১৫/১০/২০১৪