১.
ব্রাত্য রাইসু লিখিত ১৯৯৭ সালের কবিতা ‘দোরা কাউয়া পেয়ারা গাছে’ বাংলার কবিসমাজের রুচি ও কবিতা সম্পর্কিত অবস্থানরে স্পষ্ট দুই ভাগে ভাগ কইরা দেয়।
- যারা এই কবিতা পছন্দ করেন।
- যারা এই কবিতা ঘৃণা করেন।
এইটা কবিতায় কী আসতে পারে না পারে তা সম্পর্কে কবিদের প্রমিত রুচিশীলতা ও কবিতা-ধারণার দৌড় বুঝতে সাহায্য করে।
২.
অপছন্দ বা ঘৃণাদল নিয়া আমার যে ভাবনা:
- এরা নগ্নতাকে সৌন্দর্য আকারে দেখতে চায়; এবং যৌনতাকে স্বর্গীয়।
- প্রকৃতিতে মানুষ ভিন্ন অন্য প্রাণীর ‘অসুন্দর’ ও ‘অস্বর্গীয়’ যৌন কর্মকাণ্ডকে এরা এলাউ করে না; বা না দেখতে পারার চেষ্টায় রত থাকে।
৩.
অর্থাৎ প্রাকৃতিক জগতকে এরা অপছন্দ বা ঘৃণা করে। প্রকৃতিরে সৌন্দর্যে বা স্বর্গে পরিবর্তিত করা ছাড়া শিল্প বা সাহিত্যের ভিন্ন উদ্দেশ্য নাই এদের কাছে। অর্থাৎ উপমা ও রূপকই এদের সাহিত্য।
৪.
এই কবিরা গত শতকে রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গেই মারা গেছেন। যতদিন কবিতার ‘দোরা কাউয়া’ বর্তমান তা এই দুরারোগ্য রোমান্টিকদের নিরন্তর গোয়া মারতে থাকবে সে বিষয়ে সন্দেহ নাই।
৫.
বাংলা কবিতাকে পথ দেখানো এই কবিতা লিখতে পারার জন্য ১৯৯৭ সালের ব্রাত্য রাইসুকে আমার শ্রদ্ধা ও মুগ্ধতা। কত আগেই কত কিছু কইরা রাখছেন উনি। এরা খালি অপছন্দটাই করতে শিখল। ওঁদের লেখা কই!
নিচে কবিতাটি:
—————
দোরা কাউয়া পেয়ারা গাছে কা কা করে রে
দোরা কাউয়া পেয়ারা গাছে হিঃ হিঃ কী কী করে রে
পাতা ঝরে পাতা ঝরে পেয়ারার পাতা ঝরে রে
দোরা কাউয়া পেয়ারা গাছে কু কু করে রে
দোরা কাউয়া পাতি কাকের গোয়া মারে রে
পেয়ারা গাছে পাতি কাকের গোয়া মারে রে
ওরে আমার দোরা কাউয়া, দোরা কাউয়া রে,
পেয়ারা গাছে পেয়ারা গাছের পাতা ঝরে রে
ওরে আমার ঝরাপাতা, পাতাঝরা রে।।
#
(‘দোরা কাউয়া পেয়ারা গাছে’, ব্রাত্য রাইসু ১৯৯৭। ২০০১ সালে প্রকাশিত ‘আকাশে কালিদাসের লগে মেগ দেখতেছি’ বইয়ে সংকলিত)
১০/৫/২০১৬