১.
লালন তার নিজের জাতি পরিচয় লুকাইতে চাইছেন। বা প্রকাশ করতে চান নাই। অনেকে বলেন।
অন্যেরাও তার এই ইচ্ছারে গুরুত্ব দিয়া বা লালনরে অসাম্প্রদায়িক দেখাইতে গিয়া লালনের জাতি পরিচয় লুকাইতে চান দেখা যায়।
কিন্তু হিন্দু বা নাস্তিক ‘ফকির’ কি হয়?
যদি লালন নিজের ‘ফকির’ পরিচয়রে তার ‘জন্ম-পরিচয়’-এর উপরে তুইলা ধরেন তবে তো মুসলমান ফকিরই বলতে হয় তারে। নাকি না?
প্রশ্নটা হইল—মুসলমান ভিন্ন ‘ফকির’ হয় কিনা?
২.
লালনের মুসলমান ঘরে জন্ম হইছে না হিন্দু ঘরে জন্ম হইছে এইটা জানলে কী এমন ক্ষতি বুঝলাম না!
মুসলমান ঘরে জন্ম হইছিল শুনলে লালনরে গান হিন্দুরা আর শুনবে না? আর হিন্দু ঘরে জন্ম শুনলে মুসলমানে? কইছে!
তা যারা এই রকম লোক লালন হেগোরে কোন গান শোনাইতে চান, শুনি?
যেই মুসলমানরা হিন্দুর ঔরসের লালনরে নিতে পারবে না বা যে হিন্দুরা মুসলমানের পরিবারের লালনরে নিতে পারবে না তাগো যেই সমস্যা না নিতে পারার কারণে সেই একই সমস্যা তো জাতি পরিচয়হীন লালনরে নিলে পরেও থাকে।
থাকে না?
৩.
জাতি পরিচয়হীন লালনের চাইতে জাতি পরিচয় যুক্ত লালন বেটার। তাতে কীভাবে জাতের বাইরে যাওয়া যায় তার দিকদারি থাকে।
আমাদের কী করা দরকার ও না দরকার তা কেবল লালন আর লালনের পালনরা বলবেন তা হয় না, আমাদেরও লালন ব্যাপারে বলা দরকার। আসবার কালে দলপতির কী জাত ছিল তা আমরা জানতে চাইতে পারি।
যেই ধর্ম বা গোষ্ঠী বা কাল্ট সাধারণের স্বেচ্ছা নিষেধাজ্ঞার সুবিধা নিতে চায় সে বড় তেমন তরিকা নয়।
২৬/১০/২০১৫