কিছুদিন আগে শহীদ মিনারে গেছিলাম সঞ্জীব চৌধুরীর মৃত্যুরে জাতীয়করণ করার সময়ে। তো আমি গুরুত্বপূর্ণ হইয়া হইয়া উঠতেছেন এমন মানুষজনরে দেইখা শহীদ মিনারের মূল বেদীর দিকে আগাইয়া যাইতেছিলাম।
আমার পায়ে জুতা ছিল। একজন আইসা আমারে ভদ্রতা সহকারে ওইখান থিকা নামাইয়া দিতে চাইলেন। আমার তাতে আপত্তি নাই। যেইখানে জুতা না নিয়াই যাওয়া ভালো, সেইখানে জুতা নিব কেন?
আমার দার্শনিক মন প্রশ্ন করল, কিন্তু জুতা না কেন? তো আমি ওনারে জিজ্ঞেস করলাম, কিন্তু জুতা থাকলে সমস্যা কী? তখন আমার পরিচিত লোকজন, যারা আমার জুতার শহীদ মিনার ভ্রমণে লজ্জায় লুকাইয়া ছিলেন, আগাইয়া উন্নত বদনে বললেন, তুমি তো শিক্ষিত লোক, তোমারেও বইলা দিতে হবে!
এখন উপসনালয়ে জুতা পইরা যাইতে দেয় না। শহীদ মিনারেও দেয় না। কিন্তু আপনি যদি জুতা হাতে নিয়া ঘোরেন, নিজের পাশে জুতারে বসাইয়া রাইখা জুতার পাশে নিজে বইসা থাকেন—অসুবিধা নাই। এমনকী আপনে মসজিদে হারাইয়া যাওয়ার ভয়ে জায়নামাজের পাশেই জুতা রাইখা দিছেন, পিছনের কাতারের নামাজির মাথা হয়তো আপনের জুতারে প্রায় স্পর্শই করতেছে। তাইলে পবিত্রতার ধারণাটা কী? পদবিচ্যুত বা হস্তস্থিত জুতায় পাপ নাই—পদসংলগ্ন জুতায়ই যত সমেস্যা?
উপসনালয়ে—তথা সেক্যুলার উপাসনালয়ে—যথা শহীদ মিনারে—জুতা হাতে ঘুরতে হবে। সেক্যুলাররা এই ধর্মীয় কেতা রপ্ত করলেন কেন? জুতা অপরিষ্কার থাকে তো ধোওনের ব্যবস্থা করেন। পবিত্রতা তো মনে থাকে। জুতা পায়ে থাকলে অপবিত্রতা হয় হাতে থাকলে হয় না এই পৌত্তলিকতা থিকা বাইরাইয়া আসন দরকার।
ধর্মনিরপেক্ষ ও ধর্মসমন্বয়বাদীদের উপসনালয়ে জুতা পাঠের ব্যবস্থা করার জন্য পৌত্তলিক ঘরানার সেক্যুলারদের প্রতি বিনম্র আহবান।
২০/২/২০০৮
1 Comment
Add Yours →