১.
সম্মান যদি সকলের না তবে মধ্যবিত্তের সম্মান সে একান্তই মধ্যবিত্তেরই সম্মান। ছোটলোকেরটা আলাদা ধরনের।
তাই বড়লোকের অর্থাৎ মিডল ক্লাসের সম্মান হানিতে আমার মত ছোটলোক বা নিচু মানসিকতার লোকের কোনো বিশেষ অনুভূতি তৈরি হওয়ার না।
মানে আমার গায়ে লাগার না ওই কান ধরার সম্মান হানির কষ্ট।
২.
আপনার বড়লোক বা মিডল ক্লাস মাপের সম্মান বোধ দিয়া যখন ছোটলোকের প্রতি কৃত অসম্মান মূলক অবিচাররে বুঝতে চাইবেন তাতে ফাঁক থাকবে।
অর্থাৎ আপনি বা মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের যখন ছোটলোকরে কান ধরাইবেন সে ছোটলোকের সম্মানহানি ঘটবে অপেক্ষাকৃত কম।
যেহেতু সমাজে যার সম্মান কম তার সম্মানহানিও কম।
অপরাধ যেহেতু ক্লাস অনুসারে ধর্তব্য না তাই ছোটলোকরে কান ধরানোও যে অপরাধ তা অস্বীকার যাইতেছি না। মন্ত্রী মহোদয়ের ওই অন্যায় বা অপরাধের বিচার আদৌ হয় নাই তা বলতে হবে।
কিন্তু আমি সেই বিচার চাইতে যাব না। আমি শ্যামল কান্তি ভক্তকে কান ধরানোর কারণে সেলিম ওসমানেরও বিচার চাইতে যাবো না। ওগুলির জন্যে আন্দোলনকারীরা বা একটিভ একটিভিস্ট বুদ্ধিজীবীরা আছেন।
আমি পার্থক্য বা ভেদ বা বিভেদ বুঝতে চেষ্টা করি। এই আমার কাজ।
সমাজ বদলের জন্যে আমি আন্দোলনের চাইতে বরং অন্য কিছু উদ্ভাবনে বেশি আগ্রহী।
৩.
তো, ছোটলোকের সম্মান লাভ ও হারানোর প্রক্রিয়া মিডল ক্লাসের থিকা একদমই ভিন্ন ধরনের। এমনকি ওইটারে মিডল ক্লাস এমনকি সম্মান বলবে কিনা তাও ভাবনার বিষয়।
সমাজে আমরা যেইটারে সম্মান বলি ও ভাবি তা একটা উচ্চ শ্রেণীজাত সমস্যা।
তাই ছোটলোকদেরকে যখন কান ধরানো হয় সেটি সম্মানের তেমন সমস্যা না, যতটা অবিচারের।
এখন কথা হইল, বড়লোকদের সম্মানহানিরে আমি না-বড়লোক না-ছোটলোক হিসাবে কোন জায়গা থিকা দেখব? কীভাবে দেখব?
৪.
আমি মনে করি, ছোটলোকদেরকে উচ্চবর্ণে ওঠাইয়া নেওয়ার যেই রেডিমেড সাম্য তা তেমন সাম্য নয়।
শ্যামল কান্তি ভক্তের প্রতি কৃত অসম্মান তাই একান্তই মিডল ক্লাসের সমস্যা। আমি নট দ্যাট মিডল ক্লাস হিসাবে এই অসম্মানরে কম কম বুঝি।
মিডল ক্লাসের সম্মানহানিতে ছোটলোকের কিছু একটা জয় হয়। কী সেই জয়?—আমি তা বুঝতে চেষ্টা করতেছি।
১৯/৫/২০১৬