ভুয়া ছবি যদি রোহিংগাদের পক্ষে তবে সততার কী দাম!

১.
মায়ানমারে রোহিংগা নির্যাতনের ছবিগুলি ভুল প্রমাণিত হইতে শুরু করছে। দুনিয়ার রোহিংগা অংশে সত্য প্রতিষ্ঠাকরণ ও নির্যাতন বৃদ্ধিতে এর মূল্য অপরিসীমই তো, নাকি?

তবে আমি মনে করি, এই ভুয়া ছবি যাচাইকরণ কর্ম একটি অর্ধেক ভালো কাজ হইছে। ভুয়া ছবির মধ্য দিয়া যদি রোহিংগারা বাংলাদেশের সচেতন ব্লগারদের পাশাপাশি বিশ্ব মুদিত আঁখির দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হইয়া থাকে তবে ভুয়া ছবিকে কাজের ছবিই বলতে হবে। এতদিন এই ছবি কাজ কইরা আসছে ভালোই। জয়, রোহিংগাদের ভুয়া ছবির তথ্য সংগ্রামের।

rohinya 2
নাও থিকা উদ্ধারের পরে ইন্দোনেশিয়ায় ইনি খাইতে বসছেন বাচ্চাদের লইয়া। মনে হয় না রোহিংগা ছবি জালিয়াতি লইয়া কিছু মাথা ঘামাইবেন। সততার কী হবে তাহলে?

২.
নির্যাতিত জনগোষ্ঠীর বাঁইচা থাকার সংগ্রামে সততার প্রয়োজন কৌশলের অর্ধেক। অর্থাৎ যতটুকু সততা কৌশলকে সত্যে পরিণত করবে ততটুকুই প্রয়োজন সততার। এখন আপনাদের রাজ্যের সততার পরাকাষ্ঠা রোহিংগাদের কোনো কাজে আসছে না! রোহিংগাদের এখন দুই শত্রু: ‘মায়ানমারের নির্যাতক গোষ্ঠী’ এবং ‘আপনাদের সততা’।

৩.
তো ভুয়া ছবির কৌশল রোহিংগা প্রবলেমকে আপনার প্রবলেমে পরিণত করতে পারলো কি? আমার তো মনে হয় তা করতে সক্ষম হইছে। ভুয়া ছবি রোহিংগাদের রাজনৈতিক স্বার্থে কাজে লাগছে। বিশ্ববাসী জানছে রোহিংগারা সমস্যায় আছে। এখন আপনারা ভুয়া ছবিতে বাতাস দিতে থাকেন। তা পুরনো বিষয়।

৪.
ছবি যেহেতু মিথ্যা প্রমাণিত হইছে সুতরাং মায়ানমারে রোহিংগাদের কোনো প্রবলেম নাই এমন সরল সিদ্ধান্তে আসার সুবিধা আছে অন্তত এইখানে বাংলাদেশের সরকারের। সে রকমটি যাতে না ঘটে তা দেখার দায়িত্ব ভুল প্রমাণকারীদের। যেহেতু তারা নির্যাতিত রোহিংগাদের প্রচারকৌশলকে ভেস্তে দিয়েছেন, আশা করি তারা রোহিংগা নির্যাতনের আসল ছবি এখন খুঁইজা বাইর করবেন। বা অন্তত স্বীকার করবেন আসল ছবি তারা খুঁইজা পাইতেছেন না। বা আসল ছবি একদমই তোলা যাইতেছে না!

ইয়াঙ্গুনে বাংলাদেশ দূতাবাসের সামনে বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের প্রতিবাদ, ২০১৪
ইয়াঙ্গুনে বাংলাদেশ দূতাবাসের সামনে বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের প্রতিবাদ, ২০১৪। রোহিংগা সমস্যা বাংলাদেশ সরকারেরও গভীর সমস্যা।

৫.
আমার দুশ্চিন্তা: সততা এখন রোহিংগা নির্যাতনের মাত্রা বাড়ানোর তথ্য-অস্ত্রে পরিণত হইছে। ছবির ভুল প্রমাণ রোহিংগাজীবনে আদৌ কোনো ঠিক নিয়া আসবে কি?

৬/৬/২০১৫

1 Comment

Add Yours →

Leave a Reply