বাংলার অধ্যাপক ও বিশিষ্ট ‘বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র’বিদ আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ প্রবাসী শ্রমিকদের বিমানে দেশে ফেরা নিয়া ভালগার কৌতুক বা মজা করছেন।
এই নিয়া একটা ভিডিও ভাইরাল হইছে ফেসবুকে। সম্মানিত শিক্ষাবিদ ‘কুলাঙ্গার’ সহ অনেক বদনাম কামাই করছেন এই বাবদে।
কিন্তু সমাজ, ক্লাস ও মানুষ বিষয়ে আমার যে উচ্চ দার্শনিক অবস্থান, সেই ঊর্ধ্বাকাশ থিকা আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের এই মজায় আমি কোনো দোষ দেখতে পাই নাই।
কেন যে পাই নাই, আসেন তা দেখা যাক।
২.
এএ সায়ীদের এই মজারে ফার্স্টে গরিবের প্রতি মিডল ক্লাসের কৌতুক বইলা মনে হবে আপনার। ঠিক না?
কিন্তু তা না, একটু ভাইবা দেখেন, মিডল ক্লাসের বা প্রবাসী শ্রমিক মিডল ক্লাসের কিঞ্চিৎ টাকাপয়সা হওনের পরেও কেন কালচার হইল না বা কেন সে এখনও গরিবের মতই চলে-ফিরে সেই অভিযোগেরই কৌতুক বা রঙ্গ ছিল সায়ীদের এই ভিডিও।
এখন প্রশ্ন, গরিব বা যেই মিডল ক্লাস গরিবি ধইরা আছে সেই ‘ধরিব’ (ধনী কিন্তু গরিব) এর বিষয়ে মজা করা যাবে না কিনা?
আমি মনে করি যাবে। ধনী, গরিব, ধরিব সবাইরে নিয়াই মজা করা যাবে। না করতে পারলে সেই নিষেধাজ্ঞাটি হবে বর্ণবাদী নিষেধাজ্ঞা—আপনাদের যেই নিষেধাজ্ঞার কোপানলে পড়ছেন আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ।
৩.
যেই প্রবাসী শ্রমিক টাকাপয়সা হওয়া সত্ত্বেও কালচার আয়ত্ত্ব করতে পারে নাই বা করে নাই তার ‘মিডল ক্লাস টাকাপয়সা’ বনাম ‘গরিব কালচার’ বিষয়ে মজা বা কৌতুক কেন করা যাবে না? দেশে তারা টাকা পাঠায় বইলা! হাঃ হাঃ। আমরা পাঠাই না টাকা? ট্যাক্স দেই না? ফুঃ!
আপনারা, সায়ীদের সমালোচকেরা প্রবাসী শ্রমিকদের করুণা করতে উদ্যত, সায়ীদ তা করতেছেন না। তিনি সমালোচনা করতেছেন, থ্রু ব্যঙ্গ, রঙ্গ, কৌতুক, হাস্যরস ইত্যাদি, টিত্যাদি।
৪.
মিডল ক্লাস বা বড়লোকদের প্রতি যখন কৌতুক করে গরিবে, তারেও নিশ্চয়ই আপনারা আপত্তিকর মনে করেন। নাকি করেন না? তখন কেন করেন না?
সায়ীদ প্রবাসী শ্রমিকদের মানুষের মর্যাদা দিতেছেন, তাই তিনি তাদের নিয়া কৌতুক করতে পারতেছেন। আপনারা যারা তাদের নিয়া কৌতুক করতে রাজি না তারা তাদেরকে আপনাদের পঙ্ক্তিভুক্ত তো মনে করতেছেনই না, মানুষের মর্যাদাও দিতেছেন না।
আপনারা অমানুষ।
১১/৬/২০১৯