হিরো আলম, আমাদের সময়ের গুরুত্বপূর্ণ অ্যাকটিভিস্ট ও বুদ্ধিজীবী

হিরো আলম কেবল বুদ্ধিজীবীই নন, সমাজ সংস্কারকও।

অ্যাকটিভিস্ট ও বুদ্ধিজীবী হিসাবে ভবিষ্যৎ সমাজের কাছে হিরো আলমের গুরুত্ব শহিদুল আলম, মুহম্মদ জাফর ইকবাল, সুলতানা কামাল, সারা হোসেন, জাফরুল্লাহ চৌধুরী, আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বা সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীদের চাইতে বেশি হবে।

আমাদের এখানে সম্মান হচ্ছে সবকিছু বিচারের প্রধান নিয়ামক। কারণ সম্মান ক্ষমতার প্রতিভূ।

দেখবেন বুদ্ধিজীবীদের মত র‍্যাডিকেল লোকেরাও সম্মান বিষয়ে একদমই মিডল ক্লাস নিক্তি লইয়া বইসা আছেন।

কোনো ছাড় নাই, সম্মান তাদের লাগবেই!

আমি বুঝি না, একজন সত্যিকারের বুদ্ধিজীবীর চাহিদা কীভাবে হইতে পারে ‘সম্মান’?

২.
সে কারণেই, যাদের অর্থকড়ি হয় না তারাও সম্মান পাইলে সন্তুষ্ট থাকে। সব পাইছি’র অনুভূতি ব্যক্ত করেন তারা।

আর যারা শুধু প্রতিভার জোরে সমাজ বদল শুরু করছিলেন তারাও প্রতিভার কারণে অর্থবিত্ত হওয়ায় সমাজে সম্মান চাইতে শুরু করেন।

ঠিক এই কারণেই শুরুতে বিপ্লবী লেখক, শিল্পী ও ফিল্মমেকারগুলি পরবর্তীতে ‘সম্মান’-এর রক্ষিতা হিসাবে মিডল ক্লাস মিঁউ মিঁউয়ে পরিণত হয়।

এভাবে টাকা-পয়সা অলা সম্মানগোষ্ঠী আর টাকা-পয়সা নাই সম্মানগোষ্ঠি এই দুই রকম বুদ্ধিজীবীরা সমাজে স্থিতাবস্থা বহাল রাখেন।

৩.
হিরো আলমরে মিডল ক্লাস মজার আইটেম হিসাবে নেয় ও দেখায়। কারণ “ক্ষমতা তার হাতে দেওয়া যাবে না!”, “অনলি ফর বিনোদন সে ঠিক আছে!”

বাস্তবতা হইল, হিরো আলম নিজেই সম্মান চান না।

মিডল ক্লাসরে ‌ইন্টেলেকচুয়াল হিরো আলম ভাঁড়ামি ও বিনোদন দিবেন, কিন্তু তেল দিতে রাজি না!

এইটা তার বিপ্লবী জায়গা। তার ভাঁড়ামি মিডল ক্লাসের মিররিং বা আয়নাবাজির দরবার।

মিডল ক্লাস হিরো আলম নামক আয়নাটিতে নিজেরে দেখতে পায়। এবং আয়না বা হিরো আলমরে দোষ দিয়া নিজে ক্লিন থাকে।

৪.
আপনারা জানেন, সম্মানহীন লোকের প্রতিভা মাত্রই ভাঁড়ামি হিসাবে সাব্যস্ত। হিরো আলমের বুদ্ধিবৃত্তির জায়গা হইল, এই ভাঁড়ামিরে তিনি অস্ত্র বানাইয়া নিছেন।

কিন্তু যে সমাজে সম্মানই আসল সে সমাজে সম্মান না চাওয়া বা ভাঁড় হওয়া সহজ কাজ না। সবাই তা পারে না। সম্মান নিরপেক্ষ ভাবে কর্ম সম্পাদন করতে বিপুল আত্মশক্তির দরকার। সবার তা থাকে না।

আরো পড়ুন: কেন আমি হিরো আলম না, হইতেও চাই না

হিরো আলমের সম্মান, নর্মস বা ডেকোরাম ভাইঙ্গা দেওয়ার বুদ্ধিবৃত্তিক যে তেজ, তা আমাদের মিডল ক্লাস বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে নাই। ধারেকাছেও নাই।

বুদ্ধিজীবীদের করুণ উপলব্ধিগত দশাটি হইল এই যে, র‍্যাডিকেল বুদ্ধিজীবীরাও অনেকে ওনারে বুদ্ধিজীবী হিসাবে মাইনা নিবেন না।

কিন্তু উনি বুদ্ধিজীবীই।

সক্রিয় এবং আমাদের চাইতে বেটার বুদ্ধিজীবী।

তিনি রাজনীতি বা দেশ নিয়া চিন্তিত না, সমাজ তার বিষয়।

তিনি জোরেশোরে সমাজ ভাঙতেছেন।

আমাদের বুদ্ধিজীবী সমাজে বিপ্লবী হিরো আলমকে স্বাগতম।

ঢাকা, ১৬/৭/২০২১

(বুদ্ধিজীবী বিষয়ে আমার আরো লেখা পড়তে লিংকে ক্লিক করুন: বুদ্ধিজীবী)

1 Comment

Add Yours →

Leave a Reply