ওরা আমার মুখের কথা (ভাষা)
কাইড়া নিতে চায়,
ওরা, কথায় কথায় শিকল পরায়
আমার হাতে পায়।।এই ভাষারই লাইগা যারা
মায়ের বীর দুলাল
দেশের মাটি বুকের খুনে
কইরা গেছে লাল।।কইরো না আর দুঃখ শোক
শোন রে গাঁও গেরামের লোক
শোন শোন গঞ্জের সোনা ভাই
একবার বুক ফুলাইয়া কওরে দেখিরাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই।।
আবদুল লতিফ (১৯৩৫-২০০৫); ১৯৫৩
“ওরা আমার মুখের ভাষা কাইড়া নিতে চায়”—এইখানে চাষাভূষার ব্যবহৃত শব্দ বা বাক্য আসছে বটে, ভাষা আসে নাই। বা আসলেও তা অ-চাষাভূষাদের জরুরি সময়ের ঠেকা হিসাবে আইছে।
সেইরকম বাক্য এমনকি পুরা কবিতা বা পুরা নাটকও তো হয়। এগুলি বন্ধনীর ভিতরের চাষাভূষাময়তা। কবি সৈয়দ শামসুল হক যে কারণে তাঁর কাব্য পরাণের গহীন ভিতর-এ চাষাভূষা ভাষা নাট্যার্থে আনেন কিন্তু নিজে কথা বলেন পরিপাটি শুদ্ধে সে একই ব্যবস্থায় “ওরা আমার মুখের ভাষা কাইড়া নিতে চায়”ও আটকা পইড়া থাকে।
“ওরা আমার মুখের ভাষা কাইড়া নিতে চায়” গানটা শুনলেই মনে হয় অশিক্ষিত লোকদের ভাষা আন্দোলনে শহীদ হওয়ার জন্য ডাকা হইতেছে। কারণ “লেখার ভাষা কাইড়া নিতে” চায় বললে মূর্খের দল মিছিলে আইব না!
রাষ্ট্রভাষা মানে কি লেখার ভাষাই নয়?
উল্লেখ্য বাংলা পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসাবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পায় ১৯৫৬ সালের ২৯শে ফেব্রুয়ারি। সংবিধানের ২১৪ অধ্যায়ে রাষ্ট্রভাষা সম্পর্কে লেখা হয়: “The state language of Pakistan shall be Urdu and Bengali.”
১৬/১০/২০০৯