‘বাংলার কাব্য’ বইটা যে ভালো তা অনেক শুনছি। ১৯৪৫ সালে এই বই বাইর হইছিল। বিশেষত যেই আমলে ইন্ডিয়ায় মুসলমান বাঙালির প্রায় কিছু নাই তখন তিনি কত কিছু এই নিয়া উজ্জ্বল চোখমুখ খেয়াল করছি, লেখক, বিশেষত কবিদের মধ্যে।
এখন ভাবলাম নোট কইরা কইরা বইটা পড়ি। আমি কিনছি শাহবাগ আজিজ মার্কেটের প্রথমা থিকা। শোভা প্রকাশ বাইর করছে। ৬৩ পৃষ্ঠায়। ৭০ টাকায়। ২০১০-এ।
ভূমিকায় শুরুতেই কবির যা বললেন তা কেমন জানি। উদ্ধৃতি দেই:
“সামাজিক পরিপ্রেক্ষিতে বাঙলার কাব্যধারার বিস্ময়কর বিকাশের পরিপূর্ণ পরিচয় দেওয়ার দিন আজো বোধ হয় আসে নি। তার জন্য ভৌগোলিক, ঐতিহাসিক ও সামাজিক যে তথ্য সঞ্চয়ের প্রয়োজন তাও আজ পর্যন্ত অসমাপ্ত। সে বিষয়ে অভাববোধও বেশি দিনের নয়। অথচ সেই পশ্চাদপটের অভাবে বাঙলার কাব্যে বাঙালির মানসের বিকাশ বোঝা যায় না, কারণ ব্যক্তির মধ্যে সমাজমনের প্রকাশেই কাব্যের জন্ম। পশ্চাদপটের সেই অভাব পরিপূরণের চেষ্টায়ই বর্তমান ক্ষুদ্র গ্রন্থখানির উদ্ভব।”
বাঙলার কাব্যধারার বিস্ময়কর বিকাশ যদি হইয়া গিয়া থাকছিল সেই ১৯৪৫ সালেই তো তার পরিপূর্ণ পরিচয় দেওয়ার দিন তখনো আসবে না কেন? ভৌগোলিক, ঐতিহাসিক ও সামাজিক তথ্য সঞ্চয় ছাড়াই তো সেই বিকাশ হইছিল নিশ্চয়ই। বা কাব্যধারার বিস্ময়কর বিকাশ যদি হইয়া গিয়া থাকে সেই কাব্যই তো তার মধ্যে ভৌগোলিক, ঐতিহাসিক ও সামাজিক তথ্য সঞ্চিত রাখবে। হুমায়ুন বোধহয় বলতেছেন কাব্যের বাইরে থিকা কাব্যের পরিচয় দিতে হবে, সে কারণেই সে বিষয়ে পর্যাপ্ত তথ্য নাই।
কিন্তু না থাকলে কী হবে? হুমায়ুন কবির তো আছেন? “পশ্চাদপটের সেই অভাব পরিপূরণের চেষ্টায়ই বর্তমান ক্ষুদ্র গ্রন্থখানির উদ্ভব।”কোন অভাব মিটাবেন কবির? ভৌগোলিক, ঐতিহাসিক ও সামাজিক তথ্য যে বিশেষ সঞ্চিত নাই সে সম্পর্কিত অভাবের বোধ জনিত অভাব!
আমি এই রকম লেখা একদমই পড়তে পারি না। হুমায়ুন কবির লিখছেন বইলা পড়তে হইতেছে। কারণ বাঙলার অনেক কবিই এই বইরে শ্রদ্ধা করেন দেখতে পাইছি। ভূমিকাটাই হয়তো আমার অগম্য, মূল বইয়ে নিশ্চয়ই ঢোকার রাস্তা আছে। কে জানে। আস্তে আস্তে পড়ি বরং।
১০/৯/২০১২