সুইসাইডের সঙ্গে শিল্প ও সাহিত্যের একটু যোগ আছে।
শিক্ষিত, অল্প শিক্ষিত বা মোটামুটি লিখতে জানা আত্মহত্যাসেবীরা মরার আগে দেখবেন নোট লেখে। এইটা তাদের সাহিত্য। এবং আত্মহত্যাটুকু তাদের শিল্প।
অবশ্যই দুর্বল সাহিত্য ও বাচাল শিল্প।
অসফল বা দুর্বল সাহিত্যের বোধ কি আত্মহত্যা টাইনা আনে?
কেন?
অর্থাৎ সাহিত্য বা নোটের মধ্য দিয়া উৎসবের ভঙ্গিতে জীবনের শেষ দৃশ্য টানেন কেন তারা?
কোনটা মূল? সাহিত্য বা নোট? নাকি শিল্পসম্মত আত্মহত্যা বা মরাটাই?
আমি আপনাদের মতো অত নিশ্চিত না।
হয়তো আত্মহত্যাকারী ও কারিনীরা তাদের আত্মহত্যা নোট বা সাহিত্যটিকে অতি মূল্যায়িত করতে গিয়া তথা নোটের সত্যকে জীবনে ধারণ করতে গিয়া আত্মহত্যা না কইরা আর পারে না।
হয়তো তারা নিজের ভবিষ্যৎ সুইসাইড-এর ইচ্ছারেও সমষ্টির কাছে সমর্পিত চুক্তি বা প্রদত্ত কথা হিসাবে দেখে। তাই সমষ্টির কাছে দেওয়া কথা পালন করাটা তাদের কাছে আধ্যাত্মিক কর্তব্য হিসাবে দেখা দেয়।
ব্যর্থ, অপারগ, আশাহীন মানুষ আত্মহত্যা কেন করতেছে না—এই রকম চাপ কি সমাজ প্রতিনিয়তই দিতেছে না?
অবশ্যই দেয়।
যাদের লো সেল্ফ এসটিম বা কম আত্মশক্তি তারা সমাজের প্রতীকী বা রূপক ধর্মী অর্থাৎ আত্মহত্যার সাহিত্য ও শিল্পগত নির্দেশনা বা প্ররোচনা মাইনা আত্মহত্যা কইরা বসে।
আমি বুঝতে পারি তাদের সুইসাইড মরণ আসলে সাহিত্যেরই একটা প্রায়োগিক রূপ। খারাপ সাহিত্য নিঃসন্দেহে। অল্পতে অধিক ঢুকানোর সাহিত্য।
আমি এখানে কেন মানুষ আত্মহত্যা করে তার একটা মাত্র কারণ আবিষ্কার করতেছি না। বরং যারা আত্মহত্যাকে শিল্প ও আত্মহত্যার নোটকে সাহিত্য হিসাবে ধইরা লো সেল্ফ এস্টিমের কারণে আত্মহত্যা করেন তাদের তা না করার ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করতেছি।
সে কারণে কোনো সাহিত্যিক যখন আত্মহত্যার নোট লেখেন তার সেই সাহিত্যকর্মকে বিচারের বেলায় তার লিখিত অন্য সকল সাহিত্য টানাটানির দরকার দেখি না।
কেন একজন মানুষ যার জীবন ব্যাপারে আগ্রহ আর নাই সে অন্যকে তার আত্মহত্যার কারণ বা পটভূমি জানাইতে আগ্রহী হয়, তা নিশ্চয় ভাবার বিষয়।
আমি সে ভাবনার একটা আরম্ভ টানলাম এই লেখায়। আত্মহত্যাকারী লেখকরা ওইভাবে আমার বিষয় না।
সো, নো মোর আত্মহত্যা-শিল্প অর আত্মহত্যা-সাহিত্য।
সোসাইটি একটা কুসংস্কার। এর চাপানো প্রতিটা দায় বা শর্তের গোয়ায় সরাসরি লাত্থি মারেন। নিজের জীবন উপভোগ করেন।
আপনারা সাবালক হইতে শিখেন। আত্মহত্যার শিশু হিসাবে মৃত্যুবরণ করবেন না।
২৫/৩/২০২১