“ফিরে আসার সময় হুমায়ূন আহমেদ আমার সাথে সৌজন্যমূলক আলাপটুকু পর্যন্ত করলেন না। কিছু টাকা দিলেন, তাও ড্রাইভারের মারফত।… হুমায়ূন আহমেদ এমনকি অনুষ্ঠানটা কবে প্রচারিত হবে তারিখটাও আমাকে জানান নি। মানুষের কাছে কি মানুষের এতটুকু দামও থাকবে না।… আমি এইসব লোকদের ‘মরা গরুর হাড্ডির কারবারী’ বলে থাকি। জীবিত করিম আসলে কিছুই নয়। কিন্তু মৃত করিমের হাড্ডি নিয়েও একদিন ব্যবসা হবে, এটাই হলো এদেশের বাস্তবতা।”
—শাহ আবদুল করিম, একটি সাক্ষাৎকারে
(১৯৯৭, খোয়াব; সাক্ষাৎকারটি নিয়েছিলেন টি এম আহমেদ কায়সার, ১৯৯৭ সালে ছোটকাগজ ‘খোয়াব’-এর জন্যে। পরে সচলায়তনে প্রকাশিত হয় ২০০৯ সালে। )
বোঝা যাচ্ছে হুমায়ূন ড্রাইভার আর গায়কে ভেদ দেখেন নাই। আর্টিস্ট যদি আর্টিস্টের মর্যাদা না করেন তয় এইটা তার দার্শনিক অবস্থান।
গালি দেওয়া যাবে, ডাবল স্ট্যানডার্ড বলা যাবে কিন্তু উনি যদি ওনার প্যাকেজ প্রোগ্রামে আসা সব আর্টিস্টরে নিজে বিদায় না দিতে আসেন তবে সবাই তো এই রকম বলতে পারবে যে লোকটা—”মরা গরুর হাড্ডির কারবারী।”
আমরা ঠিক কোন ধরনের আর্টিস্টে আইসা হুমায়ূনের মতই এই অনুযোগরে আর পাত্তা দিব না…?
হুমায়ূনের জন্যও কি সেই একই পয়েন্ট নির্ধারণ কইরা দিব আমরা? কেন?
তবে করিম শাহের সাক্ষাৎকারে প্রতিভাত তারে আনবার কালে যে ইজ্জত দেওয়া হইছিল বিদায় দেবার কালে যথাযথ প্রটোকলের অভাবে সেই ইজ্জতই অপমানে রূপ নিছে।
আরো পড়ুন: হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাসের ভাষা
সাক্ষাৎকারে বিধৃত আছে হুমায়ূন সুনামগঞ্জের এক ব্যক্তিরে পাঠাইয়া তাঁরে আনাইছিলেন—যিনি কিনা মানুষ হওয়া সত্ত্বেও ‘জোকে’র মতো লাইগা থাইকা করিম শাহেরে নিয়া আসছিলেন হুমায়ূনের প্রোগ্রামে।
করিম শাহের প্রোগ্রাম বা উপমা দিয়া বলা চলে ‘রক্তদান’ সমাপন হইলে জোকটি বোধহয় ঝইড়া পড়ছিল!
হুমায়ূনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা যায় তিনি যে সৌজন্য রক্ষা করবেন না তা কেন আগে বইলা নেন নাই!
যদি আগে না বইলা নেন তাইলে তো তিনি সুযোগ নিলেনই অপমান করনের।
১৩ /১০/২০১১
1 Comment
Add Yours →