আহমদ ছফা, ফরহাদ মজহার ও সলিমুল্লাহ খান এই তিনজন আমার গুরুস্থানীয়।
আমি তাদের মতাদর্শ বহন না করলেও তারা আমার সাংস্কৃতিক লাইনের আধ্যাত্মিক গুরু।
কীভাবে গুরু?
তাইলে রাস্তার কথা আগে বইলা নেই।
২.
রাস্তার আছে ভাল-মন্দ ও বন্ধ হইয়া যাওয়া।
কিন্তু রাস্তা না চিনলে আপনি সেই রাস্তার ভাল-মন্দ কিছুই বুঝবেন না। কোথায় গিয়া রাস্তা ধ্বংসস্তূপ কিংবা উপসনালয় বা কবরে পরিণত বুঝতে পারবেন না আপনি। মানে আপনি তো রাস্তাই দেখলেন না। তার আর ভাল-মন্দ ও রূপান্তর আর চিনাচিনি।
ওনারা আমারে রাস্তা চিনাইছেন এমন না। বরং ওনাদের রাস্তা তো আপনারা-ও সবাই-ই চিনেন-ই। এবং তা গূহ্য কিছু নয়, বরং অতি প্রকাশিত। এবং তার সঙ্গে থাকে নানান অতীত যোগাযোগ।
তাই আপনারা যা জানেন ওনাদের বিষয়ে, তার বেশি আমি কইত্থনে জানব?
৩.
কিন্তু আপনারা যেমন ওনাদের রাস্তায় একবার খাড়াইতে পারলে আর নিজের রাস্তা খোঁজেন না আমি তো তেমন না!
আমি তিন জনের তিন রাস্তায় চক্কর মাইরা নানারূপ চতুর্থ রাস্তা আবিষ্কারে সক্ষম।
এইটাই আমি। সুতরাং তারা আমার গুরু। আমার গুরুত্বেই তারা গুরু হন আমার।
ওনারা আমার গুরু, কারণ আমি কই থিকা শুরু করব তার ধারণা পাই ওনাদের সঙ্গে বিরোধ করতে গিয়া। প্রতিবারই।
তাই এই তিনজন আমার গুরু হিসাবে থাকেন যখন আমি তাদের কথা আর শুনি না কিংবা যখন ওনাদের ডিসমিস করি তার সব অবস্থাতেই।
ওনাদের কোন কথাটা মানতে হবে না, কোন কথারে উড়াইয়া দিতে হবে তার কাঁচামাল তো ওনারাই আমারে সরবরাহ করেন, যেমন আপনাদেরও করেন, এই অপদার্থ আর্ট সমাজ ও ইনসাইটহীন বুদ্ধিজীবী গড্ডলে।
আমি তা থিকা বাইছা নেই আমার গুরুদের কী বিষয়ে কোন অবস্থানে আমি থাকব। ও থাকব না। কখন ও কখন না।
ওনারা আমারে পথ দেখান বইলা আমার গুরু হন না। সেইটা তো লজিং টিচারের কাজ।
বরং আমার পথ আমি নিজেই কীভাবে দেখতে শুরু করব তা ওনারা শিখাইছেন বইলাই ওনারা আমার গুরু।
আমি নিজেই ওনাদের গুরু বানাই। ও করণীয় ঠিক করি।
তারা, গুরুরা, যে তাদের রাস্তায় আমারে ধইরা রাখতে জোর করেন নাই—আমারে যে আমার দুই আনার রাস্তা গ্রহণে বাধা দেন নাই বা ম্যানিপুলেট করেন নাই, সেই ভালোবাসার কারণে তিন গুরুকে তাদের প্রাপ্য শ্রদ্ধা ও সালাম জানাই।
১০/৮/২০২২