শচীন দেববর্মণ ও বাংলা গানের ক্ষতি

আমার ধারণা, বাংলা গান ও কালচারের বড় ক্ষতি কইরা গেছেন শচীন দেববর্মণ (১৯০৬-১৯৭৫)।

গানে গ্রাম-অনুষঙ্গগুলিরে আধুনিক ও শহর-পছন্দ করতে গিয়া গ্রামের ভাব, ভঙ্গি ও সুররে শচীন মাস্তানের মতো কইরা টুইস্ট কইরা নিছিলেন।

স্মার্টও করছিলেন বেশ। এতই যে এখনও তা যারপরনাই স্মার্ট।

তার গানের স্মার্টনেস দিয়া পরবর্তী কালের উদাসী শহুরে ক্রিয়েটিভ, বাঙালিয়ানা প্রচারক সংস্কৃতিকর্মী এবং সাধারণ কিন্তু অসাধারণরা প্রভাবিত হইতেছেন।

ব্যাপারটা শুধু গানে আটকাইয়া থাকে নাই।

শহরবাসীর জন্যে বিকল্প গ্রাম তৈরি কইরা দিছেন শচীন দেববর্মণ। যেইটা রোমাণ্টিক, মেলোডি পূর্ণ তাই অভাব শূন্য, এবং যেন চিরকালীন!

তা দিয়া গ্রামবাংলার গায়করাও প্রভাবিত হইছেন। তাতেই যা ক্ষতির তা হইছে।

বাজারের এইই ধর্ম। শচীনও বাজার সর্দার হিসাবে বাংলা গানের সর্দারি কইরা গেছেন।

দুঃখের বিষয় এখনও তিনি তা করতেছেন।

গান যেইখানে তৈরি হইত গ্রামের সেই গানগুলি আর খুঁইজা পাওয়া যাবে না।

আরো পড়ুন: নজরুল যেখানে সাম্প্রদায়িক

তা ইতিমধ্যে যা দূষিত হওয়ার, শচীন দিয়া তা হইয়া থাকতে পারে।

গান থিকা প্রতারক শহুরে মেলোডি, মিডল ক্লাস রোমাণ্টিকতা ও বাসনার বেহুদা তীব্রতা (এই জিনিস ব্যান্ড মিউজিকরে মহামারীর মতো অন্ধকার কইরা রাখছে) ফিল্টার কইরা আগের অবস্থায় ফিরাইয়া নেওয়া অসম্ভবই ব্যাপার।

শহরের কানের জন্যে গ্রামের গানগুলিরে ভর্তা বানাইতে শুরু করছিলেন কি শচীন দেবর্মণই, নাকি তারো আগে আরো কেউ আছেন?

৩০/৭/২০২১

Leave a Reply