অস্ট্রেলিয়ান ভ্লগারকে বিরক্ত করা নন ব্লগার মোঃ কালু মিয়াকে গ্রেফতার করা হইছে!
আমরা জানি, বিদেশী দেবতাদের বিরক্ত করা রুচিহীন কাজ। আর কে না জানে কুরুচিও এক প্রকার দারিদ্র্য। আর দারিদ্র্য তো দারিদ্র্যই।
ধারণা করি, লোকটা গ্রেফতার হইছে কুরুচি তথা দারিদ্র্য বাজারজাত করার কারণে।
ফলে ভিনদেশীয়দের সঙ্গে গরীবের কথা বলা এক প্রকার নিষিদ্ধই হইতে চলছে, বলা যায়।
তবে কি সংস্কৃতি সাহেবদের “রুচির দুর্ভিক্ষ” প্রপাগান্ডার প্রথম শিকার কালু মিয়া?
অজি ভ্লগার যে কালু মিয়ার ভিডিও করতেছিলেন, তা কি জিগাইয়া নিছিলেন নাকি না জিগাইয়াই?
কালু মিয়ার প্রাইভেসি মানে রুচি রক্ষা হইছিল তো তাতে?
আমি হইলে ভিডিও করা বাবদ কালু সাহেবরে ১ হাজার টাকা দিতাম।
২.
এইটা গ্রেফতার করার মত কোনো বিরক্ত করা নয়। দেশে হাজারটা অনিয়ম চলে। সেইসব সমাধানের আগে বিদেশীদের কাছে দেশের একটা বিজ্ঞাপন মার্কা ক্লিন ইমেজ তৈরি আদৌ জরুরি কাজ নয়।
ক্রসফায়ার জিনিসটা মিডল ক্লাসের কাছে গ্রহণযোগ্য হওয়ার কারণে ছোট ছোট জিনিসরেও এখন গ্রেফতারের বিষয় ভাবতে পারতেছে পরিচ্ছন্ন ও রুচিশীল মিডল ক্লাস গোষ্ঠী।
রুচিবান মিডল ক্লাস যে কালু মিয়া গ্রেফতার বিষয়ে খোলা সমর্থন দিতেছে এর মূল কারণ বিদেশীদের চোখে নিজেদেরকে এরা ভিক্ষুক দেখাইতে চায় না। মনে করে দেশে একজন ভিক্ষা চাইল মানে তারা নিজেরাইও ভিক্ষুক হইয়া গেল!
এইটা গরীবী চিন্তা।
অস্ট্রেলিয়ায় বছর বিশেক আগে দেখছি ডাস্টবিন থিকা খাবার খুঁইজা খাইতেছে বেকার অস্ট্রেলিয়ান নারীপুরুষ। একদিন না, প্রতিদিনের দৃশ্য এইটা। অভাবের কারণে যে এই রকম করত তাও না। ড্রাগ সমস্যা ছাড়াও এইটা তাদের অভ্যাসেরও ব্যাপার। কিন্তু তাদের রুচিতে এগুলি কোনো সমস্যা না।
এখন এমন দৃশ্যের ভিডিও কইরা ছাইড়া দেওয়াটা উদ্দেশ্যমূলক। যেই কাম অজি ভ্লগার করছেন।
আপনি একটা দেশে ভ্রমণ করতে গিয়া ফুলের বাগান না নর্দমা দেখাইবেন তা আপনার নিজস্ব বাছাই। কিন্তু তা দিয়া যদি প্রশাসন চালিত হয় তবে তা লজ্জার বিষয়।
এবং যারা ভিক্ষুক ধরনের মানুষ আছে, উন্নয়ন শো করতে গিয়া তাদের কেন লুকাইতে হবে? উন্নয়ন যেমন স্বাভাবিক, গরীব বা ভিখারিও স্বাভাবিক। সব একসঙ্গে চলতে পারে। পৃথিবীর সব দেশেই চলে।
তো দারিদ্র্যজনিত বিরক্তির কারণে গরীবদেরকে গ্রেফতারের মাধ্যমে সমাজ থিকা আড়াল কইরা লওয়ার চিন্তাটা ভাল চিন্তা না।
দুঃখের বিষয়, সমাজের অগ্রসর চিন্তার লোকেরাও এমন চিন্তাই করে!
৩/৪/২০২৩